জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১-এ অন্তর্ভুক্তির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাছে ২৫টি সুপারিশ পেশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রহমান বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) শিল্প সচিব কে এম আলী আজমের কাছে ডিসিসিআইর সুপারিশমালা হস্তান্তর করেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিসিসিআই। ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি বিদ্যমান নীতিমালায় ‘এসএমই’ খাতের সংজ্ঞা সংশোধন ও ‘মধ্যম’ ক্যাটাগরিকে কুটির, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র থেকে আলাদা করার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি ‘মধ্যম’ কে বৃহৎ শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রস্তাব করেছে।
ডিসিসিআই মনে করে, এর ফলে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি আরও সহজ হবে। এছাড়া এসএমই খাতের ক্লাস্টারের উন্নয়ন, পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো ও বহুমুখী করার লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল এসএমই ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ গঠনের সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
এ বিষয়ে রিজওয়ান রহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটা মুক্ত সুবিধা হারাবে, যা কিনা আমাদের রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ অবস্থা মোকাবিলায় ঢাকা চেম্বার মনে করে, রপ্তানির সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)’ অথবা ‘অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)’ স্বাক্ষরের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে, এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে প্রায় ৩.৯ মিলিয়ন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য চাহিদা মাফিক আমাদের মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি পুনঃদক্ষ করে তুলতে হবে। দেশে স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামোতে ভারসাম্য আনা খুব জরুরি।
সুপারিশে ডিসিসিআই পণ্যের বহুমুখী করা ও গুণগত মানসম্মত পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে ঢাকা চেম্বার ‘টেকনোলজি অ্যাডাপশন ও ডিসিমিনেশন সেন্টার (Technology Adoption and dissemination) স্থাপনের সুপারিশ করেছে।
ই-কমার্স খাতের সার্বিক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এর সাথে সংশ্লিষ্ট লজেস্টিক খাতের বিকাশে একটি সমন্বিত দিক-নির্দেশনা প্রণয়নেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা চেম্বার মনে করে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) আমদানি বিকল্প এসএমই শিল্প স্থাপনের প্লট বরাদ্দে বিশেষ বিবেচনা ও আর্থিক প্রণোদনা সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। তাই সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা এসএমই উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে চেম্বার ‘এসএমই ব্যাংক’ স্থাপনেরও প্রস্তাব করেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে একটি ‘ক্রাইসিস মিটিগেশন ফান্ড’ তৈরির সুপারিশ করেছে।
এছাড়াও প্রস্তাবিত শিল্পনীতিতে যেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বেপজা, বিডা, বেজা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় থাকার বিষয়টি আরও বেশি মাত্রায় গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেই আহ্বানও জানায় ডিসিসিআই।
© All rights reserved © 2020 bd-bangla24.com